গলায় ঠান্ডা লাগলে করণীয়
ঠাণ্ডা লাগা বেশ বিরক্তিকর যখন সেটি গলা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গলা ব্যথা হলে কথা বলতে বা গিলতে বেশ সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া অন্যান্য সমস্যা যেমন হাঁচি, কাশি, সর্দি ইত্যাদিও গলা ব্যথার সাথে দেখা দিতে পারে সৌভাগ্যবশত, বিভিন্ন সাধারণ ঘরোয়া উপায়েই আমরা এসব ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। এই আলোচনায় আমরা গলায় ঠান্ডা লাগার সমস্যা থকে মুক্তি পাওয়ার কিছু কার্যকরী উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
লবন পানি দিয়ে গার্গল বা গড়গড়া করা
লবন পানি গলার প্রদাহ কমাতে ও শ্লেষ্মা বের করে দিতে সাহায্য করে। এক গ্লাস গরম পানিতে আধ চামচ লবন মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করে প্রতিবার ৩০ সেকেন্ড করে সম্পূর্ণ গ্লাসের পানি গার্গল করুন। গার্গল করে ৩০ সেকেন্ড পরপর ফেলে দিন এবং দিনে কয়েকবার করে এভাবে গার্গল করুন।
গরম পানীয় পান
গরম পানি বা চা জাতীয় উষ্ণ তরল পানীয় পান করে গলা ব্যথা প্রশমন ও প্রদাহ কমানো যায়। গরম পানীয় গলার মিউকাস কমাতেও সাহায্য করে এবং গলায় জমে থাকা কফ পরিস্কার করে।
হিউমিডিফায়ার ব্যবহার
শুষ্ক বাতাস গলার পক্ষে ক্ষতিকর। হিউমিডিফায়ার বাতাসে আদ্রতা যোগ করে ও গলা ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। তবে নিয়মিত হিউমিডিফায়ার পরিস্কার রাখতে হবে যাতে ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণু না জন্মায়।
ভয়েস রেস্টে থাকুন
খুব বেশি কথা বলা বা গান গাওয়া গলায় প্রেশার তৈরি করতে পারে এবং গলার অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। ভয়েস রেস্টে থাকলে গলা দ্রুত নিরাময় হয় এবং প্রদাহ কমে।
ওভাব দ্যা কাউন্টার মেডিসিন
ওভার দ্যা কাউন্টার মেডিসিন হলো যেসব ওষুধ সাধারণত ডাক্তারের প্রেসক্রিপশান ছাড়াই ফার্মেসিতে পাওয়া যায় সেসব। ibuprofen বা acetaminophen জাতীয় ওভার দ্যা কাউন্টার মেডিসিনগুলো গলা ব্যথা ও জ্বর কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কফ নিরাময়ের বিভিন্ন মেডিসিনও রয়েছে যা কফ কমাতে ও মিউকাস বের করে দিতে সহায়ক।
পানি পান করা
পরিমান মতো পানি পান করলে দেহ থেকে টক্সিন বেরিয়ে যায় ও গলার শুষ্কতা রোধ করে। গলার প্রদাহ কমাতে ও ঠাণ্ডা লাগা রোধে প্রচুর পরিমাণে পানি ও বিভিন্ন তরল যেমন স্যুপ, চা, জুস ইত্যাদি পান করতে হবে।
লজেন্স বা ক্যান্ডি
লজেন্স বা ক্যান্ডি গলার প্রদাহ, শুষ্কতা ও জ্বালা কমাতে সহায়ক। ইউক্যালিপটাস বা মেন্থল জাতীয় লজেন্স এক্ষেত্রে কার্যকর।
ধূমপান ত্যাগ করা
ধূমপান গলার মারাত্বক ক্ষতি করে। ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করতে হবে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেহের ইমিউনিটি বাড়ায় ও দেহকে ঠান্ডাজনিত ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। প্রতি রাতে অন্তত ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে চেষ্টা করুন এবং দিনেও প্রয়োজনে সামান্য ঘুমাতে পারেন।
শেষে বলা যায়, গলায় ব্যথা খুবই সাধারণ ঘটনা এবং এর প্রতিরোধ ও প্রতিকারও সাধারণ উপায়েই করা যায়। গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা, গরম পানীয় পান করা, ভয়েস রেস্টে থাকা, মেডিসিন খাওয়া, ধূমপান না করা, বিশ্রাম নেয়া ইত্যাদি উপায়ে গলা ব্যথা ও অন্যান্য ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে যদি সমস্যা বেড়ে যায় তবে অবশ্যই ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।