কিডনি রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা 2023
সারা বিশ্বে প্রায় মিলিয়নের বেশি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আমাদের দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বের করে দেয়ার ক্ষেত্রে কিডনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যখন কিডনি রোগে আক্রান্ত হয় তখন দেহে এসব টক্সিন জমে গিয়ে বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হয়। যদিও কিডনি রোগের চিকিৎসা রয়েছে, তবে অনেকেই কিডনি রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক সমাধান খুঁজেন।
এই আলোচনায় আমরা কিডনি রোগের বিভিন্ন প্রাকৃতিক সমাধান নিয়ে আলোচনা করবো।
ডায়েটঃ
স্বাস্থ্যকর ডায়েট কিডনি ভালো রাখতে খুবই জরুরি। কিডনি রোগীদের লবন, চিনি, প্রসেসড ফুড এবং যেসব খাবারে অতিরিক্ত পটাশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে এমন খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করে খেতে হবে। এর পরিবর্তে বেশি করে ফলমূল, শাকসবজি, কম প্রোটিন যুক্ত এবং শস্যজাতীয় খাবার খেতে হবে। রিসার্চে দেখা যায়, বেশি ফলমূল ও শাকসবজি যুক্ত ডায়েট কিডনি রোগের বৃদ্ধি কমায়।
হার্বালঃ
কিছু হার্বাল সাপ্লিমেন্ট কিডনি রোগীদের জন্য উপকারী। যেমন হলুদে থাকা এন্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান কিডনি ড্যামেজ ও প্রদাহ কমায়। ড্যান্ডেলিয়ন মূত্রের পরিমাণ বাড়িয়ে দেহ থেকে টক্সিন বের করতে সহায়ক। আরও কিছু হার্বাল যেমন আদা, নেটল এবং মিল্ক থিসল কিডনির জন্য উপকারী।
ব্যায়ামঃ
নিয়মিত ব্যায়াম ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে কিডনি ভালো রাখে। হাঁটা, যোগব্যায়াম, সাঁতার কিডনি রোগীদের জন্য ভালো ব্যায়াম। এছাড়াও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায় যা কিডনি রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ন।
আকুপাংচারঃ
আকুপাংচার এক ধরণের ট্রেডিশন্যাল চাইনিজ উপায় যেখানে দেহের কিছু নির্দিস্ট প্রেশার পয়েন্টে সুচ ফোটানো হয়। আকুপাংচার দেহে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়, প্রদাহ কমায় ও কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রনঃ
মানসিক চাপ কিডনির কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। কিডনি রোগীদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রনের জন্য মেডিটেশান, ডিপ ব্রীদিং ও ইয়োগা চর্চা করতে হবে। এভাবে ব্লাড প্রেশারও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় যা কিডনির জন্য উপকারী।
তবে কিডনি রোগীদের জন্য এসব প্রাকৃতিক উপায়ের পাশাপাশি মেডিকেল ট্রিটমেন্টও চালিয়ে যেতে হবে, এ দুটির মাঝে সমন্বয়ের জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। এসব প্রাকৃতিক সমাধানের পাশাপাশি লাইফস্টাইলে পরিবর্তন যেমন ধূমপান ও মদ্যপান না করা এবং সঠিক ওজন বজায় রাখা ইত্যাদি চেষ্টা করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, এসব প্রাকৃতিক সমাধানের উপায়গুলো কিডনি রোগের লক্ষণ ও বিস্তার ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে একজন কিডনি রোগীকে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এসব প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরন করতে হবে। অতএব বলা যায়, স্বাস্থ্যকর ডায়েট, হার্বাল, ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এনে আমরা সহজেই কিডনি ভালো রাখতে এবং সর্বোপরি সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে পারবো।