কিডনি রোগী কি কি ফল খেতে পারবে

সারা পৃথিবীতে প্রায় মিলিয়নেরও বেশি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি মূলত দেহের দূষিত পদার্থসমূহ এবং রক্তের বর্জ্য ছেঁকে বের করে দেয়ার কাজ করে। কিডনি বিকল হয়ে পড়লে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। কিডনি রোগ ঠেকানোর একটি উপায় হলো খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন করা, যেমন বিভিন্ন ধরণের ফলমূল ডায়েটে যোগ করা। তবে কিছু ধরণের ফলমূল কিডনি রোগীদের জন্য উপযুক্ত নয়। এই আলোচনায় আমরা কিডনি রোগীরা কোন ফলগুলো খেতে পারবে এবং কেন ফল খাওয়া তাদের জন্য উপকারী সেসব আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

আপেলঃ

আপেল ডায়েটারি ফাইবার বা আঁশের জন্য একটি চমৎকার উৎস, যা ব্লাড সুগার ও কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী। এটিতে পটাশিয়াম কম থাকায় কিডনি রোগীদের জন্য উপযুক্ত। এছাড়াও আপেলে রয়েছে এণ্টিঅক্সিডেন্ট, যা প্রদাহ কমায় ও কোষের ক্ষতি রোধ করে।

বেরিঃ

বেরি যেমন ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাসবেরি, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি ফল প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এছাড়াও বেরি জাতীয় ফলে প্রচুর ফাইবার থাকায় ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

আনারসঃ

আনারস প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি ও ব্রোমিলেইন সমৃদ্ধ, যা হজমে এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক। এটিতেও পটাশিয়াম কম তবে সুগার বেশি থাকায় অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না।

তরমুজঃ

তরমুজ খুবই প্রশান্তিদায়ক রসালো এবং পানিযুক্ত একটি ফল যা কিডনি রোগীদের হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করে। এটিতেও পটাশিয়াম কম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা প্রদাহ কমাতে ও সেল ড্যামেজ রোধ করতে সাহায্য করে।

আঙুরঃ

আঙুর ভিটামিন সি, ডায়েটারি ফাইবার ও এন্টি অক্সিডেন্টের ভালো উৎস যা প্রদাহ ও সেল ড্যামেজ কমাতে সহায়ক। তবে আঙুরে সুগার বেশি থাকায় কম পরিমানে খেতে হবে।

আমঃ

আম প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ ও সি সমৃদ্ধ সুস্বাদু একটি ফল যা ডায়েটারি ফাইবারেরও ভালো উৎস। কিন্তু আমে সুগার বেশি থাকায় খাওয়ার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

চেরিঃ

চেরিতেও প্রচুর এন্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইবার রয়েছে যা প্রদাহ ও সেল ড্যামেজ রোধ করে। এছাড়াও চেরিতে থাকা বিভিন্ন উপাদান হার্টের জন্য ভালো এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

পেঁপেঃ

পেঁপে প্রচুর ভিটামিন সি ও বেটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ যা প্রদাহ ও সেল ড্যামেজ রোধ করে। এটিতেও পটাশিয়াম কম থাকায় এবং আমাদের দেশে সহজলভ্য হওয়ায় কিডনি রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।

নাশপাতিঃ

নাশপাতিতে প্রচুর ফাইবার রয়েছে যা হজমে সহায়ক এবং ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও নাশপাতিতে পটাশিয়াম কম থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা প্রদাহ ও সেল ড্যামেজ রোধ করে।

শেষে বলা যায়, কিডনি রোগীরাও বিভিন্ন ফলমূল যেমন আপেল, বেরি, আনারস, তরমুজ, আঙুর, আম, চেরি, পেঁপে, ক্র্যানবেরি, নাশপাতি ইত্যাদি পরিমিত মাত্রায় খেতে পারেন। এ ফলগুলতে পটাশিয়াম কম এবং প্রচুর এন্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইবার থাকায় কিডনি ভালো রাখার জন্য খুবই উপকারী।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *