ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল? খালি পেটে এবং ভরা পেটে নরমাল কত পয়েন্ট?
ডায়াবেটিস আধুনিক সমাজে বেশ প্রচলিত একটি ক্রনিক মেটাবলিক ডিজঅর্ডার। এই রোগে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় এবং এটি শরীরের প্রায় সব গুরুত্বপুর্ন অঙ্গগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। প্রাথমিকভাবে, ডায়াবেটিস চিহ্নিত হয় রক্তে উচ্চ শর্করা মাত্রার উপস্থিতিতে।
ডায়াবেটিস দুটি ধরণের হতে পারে। প্রথমত, টাইপ 1 ডায়াবেটিস এবং দ্বিতীয়তঃ টাইপ 2 ডায়াবেটিস। টাইপ 1 ডায়াবেটিস সাধারণত শিশুদের বা তরুণ বয়সী লোকদের আক্রান্ত করে। এটি শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনের অভাবে সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয়ত, টাইপ 2 ডায়াবেটিস সাধারণত বয়োবৃদ্ধ লোকদের দেখা যায়।
খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
খালি পেটে রক্তের শর্করার মাত্রা মাপার সময়ঃ প্রতিদিন সকালে উঠে প্রথম খাবার নেওয়ার আগে খালি পেটে রক্তের শর্করার মাত্রা সাধারণত ৭০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (mg/dL) হয়। আর প্রতিদিনের সকালে উঠে খাবার নেওয়ার পর রক্তের শর্করা্র মাত্রা সাধারণত ১০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (mg/dL) থেকে ১২৫ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (mg/dL) হয়।
খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
খাবার গ্রহণের পর প্রথম দুই ঘন্টায় রক্তের শর্করার পরিমাণ সাধারণত ১৮০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (mg/dL) থেকে কম থাকে। প্রথম দুই ঘন্টায় রক্তের শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে সেটিকে হাইপারগ্লিসেমিয়া বলা হয়। তবে সাধারণত খাওয়ার দুই ঘন্টা পর রক্তের শর্করার মাত্রার একটি আদর্শ মান হচ্ছে ১৮০ মিলিগ্রাম/ডিলিটার (mg/dL) এর নিচে।
তবে রক্তের শর্করার মাত্রাই কেবল ডায়াবেটিস নির্ধারণে একমাত্র উপাদান না। ডায়াবেটিস হওয়ার নির্দিষ্ট কিছু নির্ধারক আছে যা রক্তের শর্করার মাত্রা সম্পর্কে ও অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। সেই কারণে যদি কেউ ডায়াবেটিস হয়েছে বলে সন্দেহ করে থাকেন তবে তিনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।
ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল এই প্রশ্নটির সুনির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই যেহেতু ডায়াবেটিস নরমাল হওয়ার জন্য কোন একটি স্থিতি নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে রোগীকে প্রতিদিন খাবারের পরিমান, খাবারের ধরণ এবং শারীরিক ব্যায়ামের সময়সূচি নিয়ম করে মেনে চলতে হবে। প্রতিদিন পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্যের সাথে বিভিন্ন প্রকারের সবজি ও ফল খেতে হবে। রোগীকে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং বিশেষভাবে মিষ্টি জাতীয় খাবার যথাসম্ভব পরিহার করে চলতে হবে। যদি রোগী এই সব নিয়ম মেনে চলে তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকা সম্ভব।
উপসংহার:
ডায়াবেটিস একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা অবশ্যই নিয়ন্ত্রনে রাখা উচিত। এটি নিয়মিত চেকআপ এবং সাস্থ্যকর লাইফস্টাইলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হৃদরোগ, কিডনিরোগ, চোখের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত পদ্ধতি অনুসরণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।